বর্ষায় নদ-নদীতে বেড়েছে পানির প্রবাহ। সঙ্গে জমে উঠেছে নৌ-ভ্রমণ। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়াও এর বাইরে নয়। উপজেলার লাহিড়ী মোহনপুর বড়পাঙ্গাসী এবং উধুনিয়া ইউনিয়নের নদী ও বিলের পানিতে নৌ-ভ্রমণ ও পিকনিকের ধুম পড়েছে।
এরই সুযোগ নিয়েছে একটি চক্র। পিকনিক ও নৌ-ভ্রমণের আড়ালে জমিয়ে ব্যবসা করছেন। বিনোদনের নামে নগ্নতা দিয়ে যুবসমাজকে বিপথে টানছেন। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করলেও তারা কিছু বলতে পারছেন না। প্রভাবশালীরা এসব ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করায় প্রশাসনও নিরব।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নদী-বিলে দিনভর ভাড়া করা নৌকায় উচ্চস্বরে মাইক ও সাউন্ডবক্স বাজানো হয়। উঠতি তরুণ-তরুণীরা সেই গানের তালে নাচেন। সঙ্গে নেশায় হন বুঁদ। অসামাজিক কার্যকলাপেরও অভিযোগ এসেছে।
শুধু দিনে এমনটি হচ্ছে এমন নয়। রাতেও চলছে তাদের এই ব্যবসা। দালালরা প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এই পিকনিক বাণিজ্য করছে। দালালরা গভীর রাতে টাকার বিনিময়ে যুবকদের হাতে তুলে দেন কলগার্লদের। এরপর রাতভর তারা নৌকায় ফূর্তি করেন, যার নাম দেয়া হয়েছে ‘প্রমোদতরী’।
জানা গেছে, প্রতিদিনই দহুকুলা হাট, মোহনপুর ত্রিমোহনী ব্রিজ, বড়পাঙ্গাসী বাজার, উধুনিয়া বড় ব্রিজ, ঘয়হাট্টা বাজার থেকে পিকনিক ও নৌ-ভ্রমণের এসব নৌকায় নর্তকী ভাড়া দেয়া হয়। দালালরা দু’ভাবে তাদের ভাড়া দেন। শুধু নাচগানের জন্য জনপ্রতি এক থেকে দেড় হাজার টাকা নেন। আর নাচ-খান সঙ্গে দৈহিক মিলনের জন্য আরও দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা বাড়তি ভাঙতে হয়।
বড়পাঙ্গাসী ইউনিয়নের চৌকিদার খোরশেদ এবং রুহুল ডেকোরেটরের মালিক রুহুল আমিন এসব ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তবে তারা দু’জনই এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। চৌকিদার খোরশেদ আলম বলেন, ‘আমি বড়পাঙ্গাসী ইউনিয়নের চৌকিদার, এটাই আমার পেশা। অন্য কোনো কাজে আমি জড়িত নই।’
তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সত্য নয়। চৌকিদার হিসেবে এসব ঠেকানো আমার নৈতিক দায়িত্ব। একটি চক্র আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এসব খারাপ কথা রটাচ্ছে।’
রুহুল আমিন বলেন, ‘আমি ডেকোরেটরের ব্যবসা করি। কেউ ডেকোরেটর পণ্য ভাড়া নিতে এলে তো আমি না করতে পারি না। এরপর সেসব নিয়ে নৌকায় গিয়ে কারা কি করছে তা আমার জানা নেই।’
উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুজ্জামান বলেন, ‘পিকনিক ও নৌ-ভ্রমণের নামে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।’